আমরা সবাই জানি মহাভারতের ভীষ্ম কিভাবে একটা আজীবন ব্রহ্মচারীর শপথ নিয়ে নিজের জীবনটা এমনভাবে জটিল করে ফেলেছিলেন, যে শেষে করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল! কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, আমাদের জীবনেও এমন কিছু ভুল আমরা করে বসি, যেগুলো অন্যের প্রতিশ্রুতির ভারে আমাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। তুমি কি জানো, হয়তো তুমিও এমন কিছু ভুল করছো? চল, দেখি সেই ১০টি ভুল যা তোমার জীবনটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে পারে!
১. “লোকজন কী বলবে” ফিল্টার দিয়ে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া
সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির কথা ভেবে জীবন চালানো মানে নিজের জীবনের রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে দিয়ে দেওয়া। বিশ্বাস করো, যতই পারফেক্ট হও, তবুও লোকে কিছু না কিছু বলবেই! তাই নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নাও!
২. “অন্যকে খুশি করতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলা”
সবাইকে খুশি করার চেষ্টা করা একেবারে অসম্ভব। তুমি কি কসম খেয়েছো যে, পৃথিবীর সব মানুষের হ্যাপিনেস ম্যানেজার হবে? নিজের সীমারেখা নির্ধারণ করো এবং “না” বলার সাহস রাখো।
৩. বিষাক্ত সম্পর্ক ধরে রাখা
শুধু “ও এত বছর ধরে আমার জীবনে আছে” বলে কোনো টক্সিক সম্পর্ক ধরে রাখা মানে ডাস্টবিনে থাকা খাবার খেয়ে যাওয়ার মতোই হাস্যকর! যদি সম্পর্ক তোমাকে বিষিয়ে তোলে, তবে বেরিয়ে আসার সাহস দেখাও।
৪. অন্যের স্বপ্ন তোমার জীবন বানিয়ে ফেলা
তুমি কি আসলে ডাক্তার হতে চেয়েছিলে, নাকি এটা তোমার পরিবার চেয়েছে? অন্যের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নিজের জীবনটা ট্র্যাজিক বানিয়ে ফেলো না!
৫. নিজের ইচ্ছা, চাওয়া, স্বপ্নকে সবসময় পরের জায়গায় রাখা
তুমি কি জানো, নিজের স্বপ্নকে উপেক্ষা করাটাই ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় আফসোসের কারণ হয়? তাই নিজের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দাও, অন্যের খুশির জন্য নিজের জীবন জলাঞ্জলি দিও না।
৬. ক্ষমার নামে নিজের ওপর অন্যের অত্যাচার মেনে নেওয়া
ক্ষমা করা ভালো, কিন্তু নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দেওয়া নয়। বারবার সুযোগ দেওয়া মানেই অন্যকে তোমাকে কষ্ট দেওয়ার লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া। ভুলে যেও না, তুমি একটা মূল্যবান অস্তিত্ব!
৭. অতীতের ভুল নিয়ে পরে থাকা
অতীতের ভুল নিয়ে বসে থাকলে ভবিষ্যৎটা হাতছাড়া হয়ে যাবে। ভুল থেকে শেখো, কিন্তু সেটা তোমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করতে দিও না!
৮. সবার কাছে প্রমাণ করার চেষ্টা করা যে তুমি যথেষ্ট ভালো
একটা কথা মনে রেখো, তোমার মূল্য অন্যের অনুমোদনের উপর নির্ভর করে না। নিজের জন্য ভালো হও, অন্যের চোখে ভালো হওয়ার চেষ্টা করা শুধু মানসিক ক্লান্তিই বাড়াবে।
৯. “সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা” নামক ফাঁদে পড়ে যাওয়া
সঠিক সময় কখনো আসবে না, কারণ সেটা তুমি নিজেই তৈরি করবে! তাই “ঠিক সময় হলে করবো” বলে বসে থেকো না, এক্ষুণি শুরু করো!
১০. নিজের মূল্য না বোঝা
তুমি যদি নিজেই না বুঝো তোমার কতটা মূল্য, তাহলে অন্যরা সেটা বুঝবে কেন? নিজেকে ভালোবাসো, নিজের যোগ্যতা উপলব্ধি করো এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাঁচো!
তাহলে, তুমি কোন ভুলগুলো করছো? নাকি এগুলো পড়েই রিয়েলাইজ করলে যে, তুমি নিজের জীবন অন্যের প্রতিশ্রুতির ভারে জর্জরিত করে ফেলেছো?