আচ্ছা বলো তো, যদি জীবনে এমন এক জন থাকত, যে যেকোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারত? যে কখনো কাউকে ভুল পথে চালিত করত না, বরং প্রতিটি সংকটের মুহূর্তে পাশে থাকত? ঠিক ধরেছো, আমরা কথা বলছি স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে!
কৃষ্ণ শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনের রথের সারথি ছিলেন না, তিনি ছিলেন চূড়ান্ত লাইফ কোচ! তাঁর পরামর্শ এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে, হাজার বছর পরও মানুষ গীতার জ্ঞান নিয়ে আলোচনা করে! এখন ভাবছো, “আমার তো কুরুক্ষেত্র নেই, তাহলে কীভাবে কৃষ্ণের মতো পরামর্শদাতা হব?”
চিন্তা করো না, কারণ তুমিও কৃষ্ণের মতো পরামর্শদাতা হতে পারো! কীভাবে? চলো দেখি ৫টি সিক্রেট টিপস!
১. আগে নিজেকে জানো, তারপর অন্যকে বোঝাও!
কৃষ্ণ বলেছিলেন, “আত্মানং বিদ্ধি”, মানে আগে নিজেকে জানো। অন্যকে গাইড করতে হলে প্রথমে নিজেকে ভালোভাবে বুঝতে হবে। কী তোমার শক্তি, কোথায় তোমার দুর্বলতা, এগুলো যদি বোঝো, তাহলে সহজেই অন্যদের সাহায্য করতে পারবে।
Action Step: প্রতিদিন ৫ মিনিট নিজের সঙ্গে সময় কাটাও, নিজের চিন্তাগুলোকে বোঝার চেষ্টা করো। লিখতে পারো, “আজ আমি কী শিখলাম?” বা “আমি কীভাবে ভালো হতে পারি?”
২. বন্ধুর মতো শোনো, বিচারকের মতো নয়!
বেশিরভাগ মানুষ সমস্যার সমাধান চায় না, চায় শুধু শুনতে চায়! কৃষ্ণ কিন্তু অর্জুনের কথা আগে শুনেছিলেন, তারপর পরামর্শ দিয়েছিলেন। সত্যিকারের একজন ভালো পরামর্শদাতা কাউকে জাজ করে না, বরং সহানুভূতির সঙ্গে কথা শোনে।
Action Step: কারো সমস্যার কথা শুনলে মধ্যেই পরামর্শ দিতে যেয়ো না! আগে তাকে বোঝার চেষ্টা করো, তারপর বলো, “তুমি কীভাবে দেখতে চাও ব্যাপারটা?”
৩. আবেগের বশে নয়, বুদ্ধির জোরে কথা বলো!
অর্জুন যখন “না, আমি যুদ্ধ করব না!” বলে কান্নাকাটি করছিল, কৃষ্ণ তখন দুঃখে ভেসে যাননি! বরং লজিক দিয়ে বুঝিয়েছেন যে, কষ্টের সময় আবেগ নয়, যুক্তিবাদী চিন্তা দরকার।
Action Step: কেউ যদি রেগে বা দুঃখে ভেঙে পড়ে, তখন আবেগের চেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করো। বলো, “ঠিক আছে, এখন এটা মনে হচ্ছে কঠিন, কিন্তু আমরা কী কী করতে পারি?”
৪. রাগলে জিতবে না, ঠান্ডা থাকলে জিতবে!
দ্রৌপদী যখন অপমানিত হলেন, তখন তিনিও কৃষ্ণের কাছে গিয়েছিলেন। কৃষ্ণ তাকে রাগের পরিবর্তে ধৈর্যের শক্তি দিয়েছিলেন। সত্যিকারের একজন ভালো পরামর্শদাতা বিপদে মাথা গরম করে না, বরং ঠান্ডা থাকে!
Action Step: কেউ যদি খুব বেশি রেগে যায় বা দুঃখ পায়, বলো, “চলো, আগে একটা গভীর শ্বাস নিই!” বিশ্বাস করো, এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করবে!
৫. যা বলবে, সেটাই করবে! (Walk the Talk!)
কৃষ্ণ কখনোই এমন কিছু বলেননি, যা তিনি নিজে বিশ্বাস করেন না। তিনি নিজের কথার উপর বিশ্বাস রাখতেন এবং সেটাই তাঁকে এত বড় গাইড বানিয়েছে!
Action Step: যদি কাউকে বলো, “কোনো কিছুতে হার মানবে না”, তাহলে তুমি নিজেও হাল ছেড়ো না! যদি বলো “সত্যবাদী হও”, তাহলে নিজেও সেটাই করো!
শেষ কথা: তুমি কারো কৃষ্ণ হতে প্রস্তুত?
কৃষ্ণ যেমন অর্জুনের পাশে ছিলেন, তুমিও তোমার বন্ধু, পরিবার, বা প্রিয়জনদের জন্য একজন গাইডিং লাইট হতে পারো! শুধু নিজের কথার ওপর বিশ্বাস রাখো, ভালো শ্রোতা হও, আর বাস্তবসম্মত চিন্তা করো।