দুর্যোধন! হ্যাঁ, সেই মহাভারতের ড্রামা কিং! যার বন্ধুত্বে রাজত্ব ছিল, কিন্তু আচরণে ছিল বিষ। শেষমেশ? একা, পরাজিত, আর সবার অপছন্দের পাত্র।
তবে বাস্তব জীবনেও আমরা অনেক সময় দুর্যোধনের মতো কিছু টক্সিক ভুল করে ফেলি, আর বুঝতেই পারি না যে সেগুলোই ধীরে ধীরে আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলোকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
তোমার চারপাশে কি সম্পর্কগুলো গরমিল খাচ্ছে? মনে হচ্ছে সবাই ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে? তাহলে একবার দেখে নাও, তুমি কি নিচের ৫টা ভুলের শিকার হচ্ছো?
১. নিজেকেই সবকিছুর কেন্দ্র ভাবা – “ম্যাই হুঁ না, বাকি সবাই এক্সট্রা!”
দুর্যোধনের মতো যদি সব সময় ভাবো, “সবাই আমার কথা শুনবে, কারণ আমি সব জানি”, তাহলে গেম ওভার মেয়ে!
ট্রু কথা: বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক হলো দুইপক্ষের গল্প। শুধু নিজের কথা বললে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
চেক করো: কখন শেষবার কারো মনোযোগ দিয়ে কথা শুনেছো? নাকি শুধু নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরির বিশ্লেষণেই ব্যস্ত?
২. অহংকারকে অলংকার ভাবা – “আমি ভুল করতেই পারি না!”
দুর্যোধনের সবথেকে বড় ট্র্যাজিক ফ্ল ছিল, ঈগো! ভুল হলেও ক্ষমা চাইত না, কারো উপদেশ নিতে চাইত না। ফাইনালি? গরুর মতো জেদে সব হারালো।
রিয়েল লাইফ সিনারিও: তুমি যদি কাউকে হেল্প করলেও সেটা মুখে মুখে বলে বেড়াও, বা কেউ ভুল ধরলে ছাগলের মতো লাফাও, তাহলে মুশকিল।
চেক করো: তুমি কি ‘সরি’ বলাকে দুর্বলতা ভাবো? তাহলে সাবধান হও, একদিন কেউ তোমার পাশে থাকবে না।
৩. টক্সিক বন্ধুদেরকে বেস্টফ্রেন্ড ভাবা – “শকুনি মাই বেস্টি!”
শকুনির ফ্রি-অ্যাডভাইসেই দুর্যোধন সোজা যুদ্ধে ঢুকে পড়েছিল। আর তোমার জীবনেও যদি এমন কাউকে রাখো, যে সবসময় অন্যদের বিরুদ্ধে উসকায়, তাহলে সে তোমার রিয়েল ফ্রেন্ড না!
টিপিকাল সিন: “ও তোকে ভালোবাসে না রে!”, “তুই কাউকে বিশ্বাস করিস না!” – এইরকম কথার পেছনে কারো লাভ খুঁজে দেখো।
চেক করো: তোমার বন্ধুরা কি তোমায় বড় হতে সাহায্য করে, না শুধু গসিপ আর ড্রামার টানেই পাশে থাকে?
৪. ক্ষমাশীলতা না থাকা – “আমার ব্লক লিস্টই আমার রোলেক্স!”
দুর্যোধনের মতো সবকিছুকে ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ বানিয়ে ফেলে যদি তুমি একের পর এক মানুষ ব্লক লিস্টে ঢোকাও, তাহলে একসময় তোমার ফোনেও শুধু ফুড ডেলিভারি আর OTP আসবে।
রিয়েলিটিতে: সবাই মানুষ, সবাই ভুল করে। ক্ষমা করতে পারা মানেই দুর্বলতা না, বরং এটাই ভেতরের শক্তি।
চেক করো: কাকে তুমি এখনো শুধু অহংকারের কারণে ক্ষমা করোনি?
৫. নিজের ভিতরের ভয়কে না চেনা – “আমি ভয় পাই না” বলেও ভেতরে কাঁপা!
দুর্যোধন যে আসলে ভিতরে ভিতরে ভয় পেতো, সেটা অনেকেই বুঝতো না। তুমি কি এমন কিছু লুকিয়ে রাখছো যেটা আসলে তোমার সম্পর্ক নষ্ট করছে?
যেমন: “আমি কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না”, “সবাই আমাকে ঠকাবে”, এইসব ভয় যদি তুমি কনফিডেন্সের মাস্কে ঢেকে রাখো, তাহলে সম্পর্কগুলো একটা সময় ভেঙেই পড়বে।
চেক করো: তুমি কি সত্যি শক্ত? নাকি ভেতরে অনেক কিছু চাপা দিয়ে রাখছো?
শেষ কথা: তুমি দুর্যোধন না, তুমি নিজের গল্পের দ্রৌপদী হতে পারো!
তোমার জীবনে ভুল হবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ভুলগুলো চিহ্নিত করে কাজ করাটাই তোমার রিয়েল পাওয়ার।
তাহলে এবার বলো: এই ৫টার মধ্যে তুমি কোনটা নিজের জীবনে দেখেছো? অথবা কোনটায় তুমি কাজ করতে চাও?
কমেন্ট করো, শেয়ার করো, আর নিজের ভেতরের ভালো মানুষটাকে জাগিয়ে তোলো। কারণ মেয়েরা দুর্যোধন হয় না, তারা যুদ্ধ করে জিতে নেয় সবার ভালোবাসা!